freatured banner

রাজধানীতেই শতকোটি টাকার সম্পদ হাসিনা পরিবারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ২৯, ২০২৫, ০১:৪৯

রাজধানীতেই শতকোটি টাকার সম্পদ হাসিনা পরিবারের
হাসিনা পরিবার। ফাইল ছবি

শুধু গুম-খুন নয়, লুটপাটের রানিও ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীতেই তার ও তার পরিবারের শতকোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া নামে-বেনামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তার পরিবারের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। এরপর হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। এ দুটি সংস্থার তথ্য ও নির্বাচনি হলফনামা পর্যালোচনা করে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

আয়কর আইন অনুযায়ী সব করদাতার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। বিবরণীর বাইরে সম্পদ থাকলে তা প্রচলিত আইনে অবৈধ সম্পদ হিসাবে গণ্য করা হয়। আয়কর রিটার্নে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার থাকার কথা উল্লেখ করেন। অপরদিকে শেখ রেহানা উল্লেখ করেন এক লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার। কিন্তু এই দুজনই আয়কর নথিতে ব্যাংকে লকার থাকার কথা বেমালুম চেপে যান। যদিও আয়কর আইনে লকারের তথ্য উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক।

freatured banner

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, রাজধানীতে হাসিনা পরিবারের নামে শতকোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর এসব সম্পদ থেকে প্রতিনিধির মাধ্যমে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। গুলশান নিকেতনের ২নং রোডের ৭২ নম্বর বাড়ির মালিক শেখ রেহানা। আয়কর নথি অনুযায়ী এই বাড়ির মালিক তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। এই বাসার ভাড়া তোলেন ডেভেলপার কোম্পানির কর্মীরা। 

কাগজে-কলমে বারিধারার কে ব্লকের ১০ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাড়িটির মালিক সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তবে প্রকৃতপক্ষে এই বাড়ির মালিক শেখ পরিবার। আয়কর রিটার্নের তথ্য অনুযায়ী বাড়িটির মালিক হাসিনাকন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। যার দাম দেখানো হয়েছে সাড়ে ৫ কোটি টাকা। অপরদিকে গুলশান-১ এর ৭ নম্বর বাড়িটি নিজের বলে দেখিয়েছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। এছাড়া সেগুনবাগিচায় শেখ রেহানার একটি ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া গেছে।

সোমবার হবিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয় আয়োজিত এক গণশুনানিতে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তার সম্পত্তির একটা বিরাট রকম গোঁজামিল দিয়ে ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছেন। ওই নির্বাচনি হলফনামায় শেখ হাসিনা কৃষি সম্পত্তি ৫ দশমিক ২ একর দেখিয়েছেন। অথচ দুদকের অনুসন্ধানে ২৯ একরের সন্ধান পাওয়া যায়। সে সময় দুদক বিষয়টি নিয়ে কাজ করলেও মনোনয়ন বাতিলে পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

হলফনামায় যা আছে : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কৃষি খাত থেকে শেখ হাসিনা আয় দেখিয়েছেন ৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত আছে ২৫ লাখ টাকা, চাকরি থেকে বার্ষিক আয় ১৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, ব্যাংক সুদ ও এফডিআর থেকে প্রাপ্তি ৩২ লাখ ২৫ হাজার টাকা, রয়্যালেটি হিসাবে ২৩ লাখ টাকা আয় দেখিয়েছেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ২৮ হাজার ৫৩০ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২ কোটি ৩৮ লাখ ৯৮ হাজার ৬০৭ টাকা, সঞ্চয়পত্র ২৫ লাখ টাকা, এফডিআর ৫৫ লাখ টাকা, ৩টি মোটরগাড়ি, ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা স্বর্ণালংকার এবং ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা আসবাবপত্র দেখানো হয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে- ১৫ বিঘা কৃষি জমি, ঢাকার পূর্বাচলে ২৭নং সেক্টরের ২০৩নং রোডের ৯নং প্লট। এই প্লটের আনুমানিক মূল্য দেখানো হয়েছে ৩৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। এছাড়া ৫ লাখ টাকা মূল্যের ঢাকায় ৩ তলা ভবনসহ ৬ দশমিক ১০ শতাংশ জমি দেখানো হয়েছে।


google-news-feed আমার সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

রাজধানী

logo
সর্বশেষ সংবাদ